Friday, January 18, 2013

একটি মুক্ত পাখি


একটি মুক্ত পাখি

free bird pic 1
এক.
একটি মুক্ত পাখি
এক.
ছোট্ট ছেলে সামা।
তার পরিবারের সবাই তাকে ‘লাজুক ছেলে’ বলে ডাকে, তবে এটা সত্য যে, সে ‘ছিঁচকাঁদুনে’ বালক নয় । ছিলো লাজুক, কিন্তু অল্প স্বল্প লাজুক না, খুব বেশি লাজুক। যদি কোন অপরিচিত আগন্তুক বা আত্মীয় তাদের বাড়ি এসে চা বা খাবার খাওয়ার সময় তার নাম নিয়ে ডাকে, সামা তার মাথা নীচু করে চোখ বন্ধ করে কয়েক মিনিটের মধ্যে রোম ত্যাগ করে ছুটে চলে যায়। তার মাতা-পিতাও তার ব্যবহারে অস্বস্তি বোধ করেন, এবং সবসময় মেহমান চলে যাওয়ার পর তাকে
তিরস্কার করেন।
“তুমি আর এখন ছোট্ট খোকাটি নও! তুমি আট বছরের বালক! কেন তুমি উত্তর দিতে পার না, যখন তোমাকে কেউ কিছু জিজ্ঞেস করে?” এভাবে তার মা তার প্রতি রাগের সাথে গম্ভীর গলায় বজ্রপাত করলেন। তার বড় ভাই তাকে বার বার “লাজুক বালক, লাজুক বলক!” বলে তিরষ্কার করে গেলো।
সামা খুব একটা প্রয়োজন ছাড়া কথা বলে না। তার স্কুলে ক্লাসরোমের একদুম পেছনের সীটটায় বসতে পারলে তার ভালো লাগে। যাতে করে তার শিক্ষক তাকে তেমন একটা খেয়াল না করতে পারে। যখন তাকে কোন প্রশ্ন করা হয় সে প্রায়ই অসুস্থতার ভান করে উওর না দেয়ার চেষ্টা করে। তার ব্যাপারে তার শিক্ষক আগ্রহবোধ হারিয়ে ফেলেন। তার পরিবারও তার লজ্জাশীলতায় আগ্রহ হারিয়ে তাকে একা থাকতে দেন । সবাই তাকে এড়িয়ে চলেন; তাই সে একা হয়ে পড়েছে। সুতরাং তুমি যেমন দেখছ, সামার জন্য জীবন কঠিন হয়ে পড়েছে। তার এই অসাভাবিক লজ্জাশীতার ব্যাপারে তাকে
তার পরিবার কিছুই বুঝতে পারছেন না; এমন কী সামা নিজেও না।
প্রতি রাতে যখন নিদ্রায় যায়, মনে মনে সে প্রার্থনা করে যে, তার এই ভয়ংকর লজ্জাশীলতা থেকে কী ভাবে মুক্তি পাবে এবং প্রতিদিন সকালে সে বুঝতে পারে যে, তার এই অবস্থার কোন পরিবর্তন হচ্ছে না; সে তখনও আগের লাজুক সামা’ই রয়ে গেছে। সে ইচ্ছে পোষণ করে যে, ঠিক তার বড় ভাই হ্যারি’র মতোই তাকে হতে হবে, যে থাকে সারাক্ষণ প্রাণবন্ত, বানরে মতোই কথা বলতে থাকে সারা দিন। প্রত্যেকেই হ্যারিকে পছন্দ করে কিন্তু সবাই সামাকে এড়িয়ে চলে।
একদিন সামা আর হ্যারি স্কুল থেকে ফিরছিলো, সামা অরণ্যের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ পথ হেটে বাড়ি আসার সিদ্ধান্ত নিলো। তাই হ্যারি ও অন্যান্য বন্ধুদের ছেড়ে সে দীর্ঘ পথ ধরে হাঁটা শুরু করলো। হ্যারি যে, সারাক্ষণ কথা বলতেই থাকে, কথা বলার ধ্যানে থাকায় সামা কখন তাদের ছেড়ে অন্যদিকে চলে গেছে বুঝতেই পারে নি। অরন্যের যে দিকটায় গাছের সংখ্যা কম এবং সূর্যের আলো গাছের পাতার আবরণ ভেদ করে নীচে পড়ছে সে দিকটা সামার ভালো লেগেছে। এই যায়গাটা সবময় নীরব, ঠান্ডা, কেউ তাকে বিরক্ত করতে আসবে না। সে তার স্কুল ব্যাগ নীচে রেখে উঁচু ইউক্লিপ্টাস গাছের ছায়ায় বসলো।
দুই.
সে এক মূহুর্ত চিন্তা করলো, স্কুল থেকে একা একা এবং বিলম্ব করে ফেরার জন্য তার মা তার সাথে কী রকম আচরণ করতে পারেন কিন্তু ঠিক তখনই মন থেকে এই চিন্তাটা ছুড়ে ফেলে দিলো। সে অরণ্যে একাকীত্বের সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে চেয়েছে, এখন আর অন্য কোন চিন্তা করতে চায় না।
একটি কাঠবিড়াল তীব্র গতীতে তার জুতার উপর দিয়ে চলে গেলো। সামা মুখ টিপে হাসলো। একটি হলুদ ঠোঁট বিশিষ্ট ময়না পাখি দু’পা একত্র করে তার চার দিকে লাফাচ্ছে। ব্যস্ততার সাথে মাটিতে খুঁটে খুটে আদাড় খাচ্ছে। সে ভাবলো, ময়নার সাথে সে কথা বলার অনুশীলন করতে পারে, সুতরাং সে তার
গলা একটু পরিস্কার করে নরম এবং ধীরে ধীরে বললো “আস সালামু আলাইকুম! আমার নাম সামা।” সে তার নিজের আওয়াজ কদাচিৎ শুনেছে, আওয়াজ অস্বাভাবিক, “আমি ভিলুয়া গ্রামে বাস করি। আমার বাড়িতে…” সে প্রকৃতপক্ষে চিন্তা করছিলো না, সে কেবল কিছু একটা বলতে চাচ্ছিলো যা তার মনে উঁকি দিচ্ছে… “আমার ভাই হ্যারি হকি খেলে, কিন্তু খুব একটা ভালো খেলে না……”
6ad81000f6498ee9acf56edfdcbd66d3
হঠাত করে সে পরিস্কার নীচ ও চিকন স্বরে বলতে শুনলো, ” হ্যা, হ্যা। আমি তোমার ব্যাপারে সব কিছুই জানি। নিজের ব্যাপারে পরিচয় দেয়া বন্ধ কর!”
সামা কথা বলা বন্ধ করে চার দিকে সতর্কতার সাথে চোখ বুলালো। সে তার চোখ সরু করে গাছের দিকে তাকাচ্ছে, কিন্তু চার দিকে কোথাও কেউ নেই। সামা একটু চিন্তিত হয়ে পড়লো। সে শুনেছে জংগলে দস্যুরা লুকিয়ে থাকে সে তার ব্যাগ হাতে নিলো এবং প্রচন্ড বেগে ধাবিত হওয়ার সিদ্ধান্ত করলো, যখন সে একই ভাবে পরিস্কার ছোট্ট নীচ স্বরে আওয়াজ শুনতে পেলো,
“দাঁড়াও! আমি তোমার সাথে কথা বলতে চাই!”
ভীত মনে সামা জিজ্ঞেস করলো,
“তুমি কোথায়?”
“এখানে, বোকা! নীচে এখানে!”
সামা তার চতুর্দিকে তাকালো, সে একটি ময়না দেখলো মাটিতে বসে আছে, এটার ঠোঁটে একটা ছোট ডাল কামড় দিয়ে আছে। চমৎকার, চমৎকার! এটি একটি কথা বলার ময়না! সামা উল্লাসিত হয়ে উঠলো। তৎক্ষণাৎ সে চিন্তা, এটা ধরে বাড়ি নিয়ে যাবে এবং এটাকে একটা সুন্দর খাঁচায় আটকে রাখবে।
“আহ, না! আমি জানি তুমি কী চিন্তা করছ, তুমি হলে ছোট দুষ্ট। আমাকে কোন খাঁচায় বন্দি করার চেষ্টা করো না। আমি একটি পাখি। গাছগাছালিই আমার বাড়ি। ঐ নীল আকাশ আমার চলার পথ। একটি ছোট্ট সংকীর্ণ খাঁচায় বন্দী হতে চাই না আমি।”
সামা বিস্মিত হলো। তুতা পাখি আর ময়না কথা বলে এটা সে আগে শুনেছে; তাদের যা শেখানো হয় তার চেয়ে বেশি কথা বলতে পারে না। কিন্তু এই ময়নাটি আসলেই অসাধারণ।
“শোন, আমার নাম আজাদ। তুমি বোধহয় জানো এটার কী অর্থ?” ময়নাটি তার ঠোটের চিকন ছোট ডালটি মোচড়াচ্ছে, “এটা অর্থ হল মুক্ত।” কথার প্রসঙ্গে বলি, “আমি তোমাকে সাহায্য করতে পারি এই শর্তে যদি তুমি আমাকে
সাহায্য করো।”
সামা এ ব্যাপারে একটু চিন্তা করলো। কী ভাবে ময়না আজাদ তাকে সাহায্য করতে পারে, আর সেই বা কী ভাবে ময়নাকে সাহায্য করবে।
“হ্যা, হ্যা। আমি জানি তুমি কি চিন্তা করছো। “কী ভাবে এই দুষ্ট ছোট পাখি আমাকে সাহায্য করতে পারে?’ আমি তোমাকে বলবো কী ভাবে সাহায্য করব, আমার বন্ধু। তুমি হলে লাজুক, ঠিক?” ঈষৎ মাথা নাড়ালো সামা, এমন কী এই মূহুর্তে বিস্মিত! “ঠিক আছে, সুতরাং এখানে যা কিছু আমরা একে অন্যের জন্য করতে পারি। তুমি যদি আমার সাথে কথা বলতে থাকো তবে তুমি লজ্জাভাব কাটিয়ে উঠে প্রাণবন্ত হবে। এটাই হচ্ছে আমি কী ভাবে তোমাকে সাহায্য করতে পারি। বিনিময়ে তুমি তোমার বাবা ও অন্যান্য প্রতিবেশীদের বুঝাবে তারা যেনো বনের গাছ আর না কাটেন। যদি তারা এসব গাছগাছালি কেটে ফেলেন, তবে আমরা
আমাদের বাড়ি হারাবো এবং তারপর আমরা আর মুক্ত থাকতে পারবো না।”
এটার কথা সামার কাছে চমৎকার পরিকল্পনা মনে হোল। পরবর্তি সপ্তাহে সামা পরিকল্পনা করলো প্রতিদিন আজাদের সাথে এখানে এসে দেখা
করবে। ঠিক সেই সময় সামা আজাদের সাথে কথা বলে বলে নিজের লজ্জাভাব
থেকে কাটিয়ে উঠে প্রাণবন্ত হতে পারবে।
তারা একে অপরের সঙ্গ ত্যাগ করলো, সামা চমৎকার ময়নার অসাধারণ কথার ব্যাপার চিন্তা করতে করতে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলো।
তার মা ছিলো তাদের ঘরের দরজার পাশে দাঁড়িয়ে, হাতে একটি ঝাঁটা নিয়ে অপেক্ষা করছিলো। সামা জানলো যে তাকে ঐ ঝাঁটা দিয়ে আঘাত করা হবে, কিন্তু তার কাছে এটা তেমন ব্যাপার না। সে এতটা উত্তেজিত ছিলো যে ঝাঁটার ব্যাপারে চিন্তাই করতে পারলো না!
তিন.
পরবর্তী দুপুরের পর পরিকল্পনা মতো ইউক্লিপ্টাস ঝাড়ের দিকে যাওয়ার রাস্তা খুঁজে পেতে তার সমস্যা হলো না । এবং সামার যথেষ্ট বিশ্বাস, আজাদ সেখানে থাকবে। সেই সময় সে ছিলো বিশ্রাম রত, তার মাথা ছিলো তার পাখার উপর এবং সে গুনগুনিয়ে একটি গান গাচ্ছিলো! সে আসলে প্রকৃতপক্ষে মজার একটি ছোট পাখি ছিলো, এবং সামা সাহায্য করতে পারলো না কিন্তু হাসলো।
“এটা কি? আগে কখনো পাখি গান গাইতে শুনো নি।”
“না!” সামা হেসে উত্তর দিলো, “আমি শুনি নি।”
“দেখ! এটা চমৎকার না? তুমি শুধু আমার সাথে কথা বলছ!” আজাদ তার পাখাগুলোকে এক সাথে ঝাঁপটা দিলো। এবং তাদের কথাবার্তা ঐ দিন থেকেই শুরু হলো। শীঘ্রই সামা বুঝতে পারলো যে, সামা যা কিছুই বলছে আজাদ শুনে শুনে তাই করে চলছে। সামা শিহরিত হয়ে উঠলো। এটা ছিলো একটা স্বপ্ন, যা বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। হ্যারি এখন তাকে পছন্দ করবে, আরো বন্ধুরাও। তার এখন বন্ধুর অভাব হবে না। শেষ পর্যন্ত তাকে “লজ্জাশীল বালক” এ কথাটি আর শুনতে হবে না।
এ ভাবে তার সপ্তাহ শেষ হোল। বাসায়, সামার মা-বাবা তার মাঝে বিশেষ পরিবর্তন লক্ষ্য করলো, সে আর আগের জরাগ্রস্ত, লজ্জাশীল কথা বলায় অপারগ বালক নয়। সে এখন বাসায় আগন্তুক মেহমানদের সাথে , প্রতিবেশী বাচ্চাদের সাথে কথা বলে। সবাই সামার এই পরিবর্তন দেখে বিস্মিত হোল যদিও তারা তাকে কিছু জিজ্ঞেস করে নি।
শেষ দিন, আজাদ সামাকে জিজ্ঞেস করলো সে তার বাবা ও প্রতিবেশীদের গাছ না কাটার জন্য অনুরোধ করেছে কী না। সামা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হোল যে, সে তাদের অবশ্যই অনুরোধ করবে তারা যেন গাছ না কাটে। তারপর সে আজাদকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানালো। মানুষ যে ভাবে হেন্ড শেইক করে সে ভাবে আজাদ তার পাখা ঝাপ্টালো। সামা যখন যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হলো আজাদ তাকে বললো, “স্মরণ রাখিও বন্ধু, যদি তুমি তোমার প্রতিজ্ঞা রক্ষা না করো, তুমি আবার আগের সেই লজ্জাশীল বালকে পরিনত হয়ে যাবে।”
সামা বাড়ি ফিরে চিন্তায় পড়ে গেলো কীভাবে সে তার বাবা ও অন্যান্য মানুষদের গাছ কাটা থেকে বিরত রাখতে পারে! যদি সে তাদেকে তা থেকে বিরত থাকতে বলে তবে, তারা তার কথা শুনবে না। যদি সে ময়না গাছ না কাটার জন্য অনুরোধ করেছে এ কথা বলে, তবে তারা তাকে পাগল বলেবে। গভীর রাতে সে বিছানা থেকে উঠে তাদের ঘরের চালায়
de231d876d18d4ae0a7013cc3ec08216
রাখা কুঠারটি হাতে নিলো, এবং এভাবেই প্রতিবেশী ও গ্রামের সবার বাড়ি
বাড়ি গিয়ে সবার কুঠার সংগ্রহ করলো; এগুলো নিয়ে গিয়ে সে দূরে এক মাঠে
মাটির নীচে পুঁতে রাখলো।
পরবর্তি সকালে, গ্রামে হৈ চৈ পড়ে গেলো, এক জন বলে, আমার কুঠার নিয়ে গেছে, আর এক জন বলে আমারটাও, এভাবে তারা পারস্পরিক জিজ্ঞেস করতে লাগলো, কেউ কী কোন চোর দেখেছে কী না। কারও বাড়ির কুঠার আর অবশিষ্ট নেই। সবার বাড়ির কুঠার কে যেন নিয়ে গেছে। কেউ এই রহস্য ভেদ করতে পারলো না। গ্রামের এক বয়স্ক ব্যক্তি বললো, “এটা জঙ্গলের কাজ,
সে চায় না,তুমি আর জঙ্গলের গাছ নিধন করো। গাছ কাটলে জঙ্গলে বসবাস রত পশুপাখিরা তাদের ঘর হারায়। এতে তাদের অনেক কষ্ট হয়। আর গাছে নিধন করিও না, তা না হলে তুমি জঙ্গলের রোষানলে পড়বে।” গ্রামবাসী সবাই একমত হলো, তারা আর জঙ্গলের বৃক্ষ নিধন করবে না। বৃদ্ধ মানুষটি বললো ঠিক আছে।
এতে সামা খুব খুশি হোল। সে তার প্রতিজ্ঞা রক্ষা করতে পেরেছে। ময়না পাখি-’আজাদ’ মুক্তই থাকবে এবং সামা আর পূণরায় লজ্জাশীল বালক হবে না।
রাতে খাবারের পর, দরজার বাহিরে সামা কক্কক শব্দ শুনতে পেলো। সে বাহিরে পা বাড়ালো, এম্নিই আজাদকে দেখতে পেলো, “সুতরাং সামা! আমরা
চিরদিনের জন্য বন্ধু হতে চলেছি, তুমি তোমার প্রতিজ্ঞা রক্ষা করেছো এবং আমি আমারটা রক্ষা করেছি। যদি আমাকে কোন দিন তোমার প্রয়োজন হয়, তুমি জানো আমার সাক্ষাৎ কোথায় পাবে।”
“হ্যা, আজাদ। আবারও তোমাকে ধন্যবাদ। তুমি চিরদিনের জন্যই আমার বন্ধু হয়ে থাকবে।”
ঘরের ভেতর থেকে তার মা তাকে ডেকে বলছে,”সামা! তুমি কার সাথে কথা বলছ?”
“কেউ না মা!” সে উত্তর দিলো।
“এটা ব্যাপার না। তুমি পাখির সাথে যতক্ষণ ইচ্ছে কথা বলতে পারো সামা!”
“হ্যা, মা! আমি পাখিদের সাথে কথা বলবো!” সামা উত্তর দিলো এবং আজাদ সামার দিকে চোখ মাড়লো।
——
অনূদিত গল্প
রেটিং করুন:
Rating: 0.0/5 (0 votes cast)
Rating: 0 (from 0 votes)
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের, লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর। শব্দনীড় ব্লগ কোন লেখা ও মন্তব্যের অনুমোদন বা অননুমোদন করে না।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

১৪ টি মন্তব্য (লেখকের ৭টি) | ৬ জন মন্তব্যকারী

  1. নাজমুল হুদা : ১১-০৬-২০১২ | ১২:১৪ |
    Delete
    বিদেশী গল্পের সাথে সেতুবন্ধনের এই প্রয়াস প্রশংসণীয়! গল্পটাও শিক্ষামূলক আর পরিবেশ সচেতন করে তুলবার জন্য কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। ভাষায় কোথাও কোথাও কিছু মিশ্রণ ঘটেছে, আছে কিছু টাইপো। এগুলো দূর করলে এটাকে অনবদ্য অনুবাদ বলতে যা বুঝায় তা হয়ে উঠবে।
    আপনার এ উদ্যোগের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ভাই।

একটি মুক্ত পাখি


একটি মুক্ত পাখি

free bird pic 1
এক.
একটি মুক্ত পাখি
এক.
ছোট্ট ছেলে সামা।
তার পরিবারের সবাই তাকে ‘লাজুক ছেলে’ বলে ডাকে, তবে এটা সত্য যে, সে ‘ছিঁচকাঁদুনে’ বালক নয় । ছিলো লাজুক, কিন্তু অল্প স্বল্প লাজুক না, খুব বেশি লাজুক। যদি কোন অপরিচিত আগন্তুক বা আত্মীয় তাদের বাড়ি এসে চা বা খাবার খাওয়ার সময় তার নাম নিয়ে ডাকে, সামা তার মাথা নীচু করে চোখ বন্ধ করে কয়েক মিনিটের মধ্যে রোম ত্যাগ করে ছুটে চলে যায়। তার মাতা-পিতাও তার ব্যবহারে অস্বস্তি বোধ করেন, এবং সবসময় মেহমান চলে যাওয়ার পর তাকে
তিরস্কার করেন।
“তুমি আর এখন ছোট্ট খোকাটি নও! তুমি আট বছরের বালক! কেন তুমি উত্তর দিতে পার না, যখন তোমাকে কেউ কিছু জিজ্ঞেস করে?” এভাবে তার মা তার প্রতি রাগের সাথে গম্ভীর গলায় বজ্রপাত করলেন। তার বড় ভাই তাকে বার বার “লাজুক বালক, লাজুক বলক!” বলে তিরষ্কার করে গেলো।
সামা খুব একটা প্রয়োজন ছাড়া কথা বলে না। তার স্কুলে ক্লাসরোমের একদুম পেছনের সীটটায় বসতে পারলে তার ভালো লাগে। যাতে করে তার শিক্ষক তাকে তেমন একটা খেয়াল না করতে পারে। যখন তাকে কোন প্রশ্ন করা হয় সে প্রায়ই অসুস্থতার ভান করে উওর না দেয়ার চেষ্টা করে। তার ব্যাপারে তার শিক্ষক আগ্রহবোধ হারিয়ে ফেলেন। তার পরিবারও তার লজ্জাশীলতায় আগ্রহ হারিয়ে তাকে একা থাকতে দেন । সবাই তাকে এড়িয়ে চলেন; তাই সে একা হয়ে পড়েছে। সুতরাং তুমি যেমন দেখছ, সামার জন্য জীবন কঠিন হয়ে পড়েছে। তার এই অসাভাবিক লজ্জাশীতার ব্যাপারে তাকে
তার পরিবার কিছুই বুঝতে পারছেন না; এমন কী সামা নিজেও না।
প্রতি রাতে যখন নিদ্রায় যায়, মনে মনে সে প্রার্থনা করে যে, তার এই ভয়ংকর লজ্জাশীলতা থেকে কী ভাবে মুক্তি পাবে এবং প্রতিদিন সকালে সে বুঝতে পারে যে, তার এই অবস্থার কোন পরিবর্তন হচ্ছে না; সে তখনও আগের লাজুক সামা’ই রয়ে গেছে। সে ইচ্ছে পোষণ করে যে, ঠিক তার বড় ভাই হ্যারি’র মতোই তাকে হতে হবে, যে থাকে সারাক্ষণ প্রাণবন্ত, বানরে মতোই কথা বলতে থাকে সারা দিন। প্রত্যেকেই হ্যারিকে পছন্দ করে কিন্তু সবাই সামাকে এড়িয়ে চলে।
একদিন সামা আর হ্যারি স্কুল থেকে ফিরছিলো, সামা অরণ্যের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ পথ হেটে বাড়ি আসার সিদ্ধান্ত নিলো। তাই হ্যারি ও অন্যান্য বন্ধুদের ছেড়ে সে দীর্ঘ পথ ধরে হাঁটা শুরু করলো। হ্যারি যে, সারাক্ষণ কথা বলতেই থাকে, কথা বলার ধ্যানে থাকায় সামা কখন তাদের ছেড়ে অন্যদিকে চলে গেছে বুঝতেই পারে নি। অরন্যের যে দিকটায় গাছের সংখ্যা কম এবং সূর্যের আলো গাছের পাতার আবরণ ভেদ করে নীচে পড়ছে সে দিকটা সামার ভালো লেগেছে। এই যায়গাটা সবময় নীরব, ঠান্ডা, কেউ তাকে বিরক্ত করতে আসবে না। সে তার স্কুল ব্যাগ নীচে রেখে উঁচু ইউক্লিপ্টাস গাছের ছায়ায় বসলো।
দুই.
সে এক মূহুর্ত চিন্তা করলো, স্কুল থেকে একা একা এবং বিলম্ব করে ফেরার জন্য তার মা তার সাথে কী রকম আচরণ করতে পারেন কিন্তু ঠিক তখনই মন থেকে এই চিন্তাটা ছুড়ে ফেলে দিলো। সে অরণ্যে একাকীত্বের সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে চেয়েছে, এখন আর অন্য কোন চিন্তা করতে চায় না।
একটি কাঠবিড়াল তীব্র গতীতে তার জুতার উপর দিয়ে চলে গেলো। সামা মুখ টিপে হাসলো। একটি হলুদ ঠোঁট বিশিষ্ট ময়না পাখি দু’পা একত্র করে তার চার দিকে লাফাচ্ছে। ব্যস্ততার সাথে মাটিতে খুঁটে খুটে আদাড় খাচ্ছে। সে ভাবলো, ময়নার সাথে সে কথা বলার অনুশীলন করতে পারে, সুতরাং সে তার
গলা একটু পরিস্কার করে নরম এবং ধীরে ধীরে বললো “আস সালামু আলাইকুম! আমার নাম সামা।” সে তার নিজের আওয়াজ কদাচিৎ শুনেছে, আওয়াজ অস্বাভাবিক, “আমি ভিলুয়া গ্রামে বাস করি। আমার বাড়িতে…” সে প্রকৃতপক্ষে চিন্তা করছিলো না, সে কেবল কিছু একটা বলতে চাচ্ছিলো যা তার মনে উঁকি দিচ্ছে… “আমার ভাই হ্যারি হকি খেলে, কিন্তু খুব একটা ভালো খেলে না……”
6ad81000f6498ee9acf56edfdcbd66d3
হঠাত করে সে পরিস্কার নীচ ও চিকন স্বরে বলতে শুনলো, ” হ্যা, হ্যা। আমি তোমার ব্যাপারে সব কিছুই জানি। নিজের ব্যাপারে পরিচয় দেয়া বন্ধ কর!”
সামা কথা বলা বন্ধ করে চার দিকে সতর্কতার সাথে চোখ বুলালো। সে তার চোখ সরু করে গাছের দিকে তাকাচ্ছে, কিন্তু চার দিকে কোথাও কেউ নেই। সামা একটু চিন্তিত হয়ে পড়লো। সে শুনেছে জংগলে দস্যুরা লুকিয়ে থাকে সে তার ব্যাগ হাতে নিলো এবং প্রচন্ড বেগে ধাবিত হওয়ার সিদ্ধান্ত করলো, যখন সে একই ভাবে পরিস্কার ছোট্ট নীচ স্বরে আওয়াজ শুনতে পেলো,
“দাঁড়াও! আমি তোমার সাথে কথা বলতে চাই!”
ভীত মনে সামা জিজ্ঞেস করলো,
“তুমি কোথায়?”
“এখানে, বোকা! নীচে এখানে!”
সামা তার চতুর্দিকে তাকালো, সে একটি ময়না দেখলো মাটিতে বসে আছে, এটার ঠোঁটে একটা ছোট ডাল কামড় দিয়ে আছে। চমৎকার, চমৎকার! এটি একটি কথা বলার ময়না! সামা উল্লাসিত হয়ে উঠলো। তৎক্ষণাৎ সে চিন্তা, এটা ধরে বাড়ি নিয়ে যাবে এবং এটাকে একটা সুন্দর খাঁচায় আটকে রাখবে।
“আহ, না! আমি জানি তুমি কী চিন্তা করছ, তুমি হলে ছোট দুষ্ট। আমাকে কোন খাঁচায় বন্দি করার চেষ্টা করো না। আমি একটি পাখি। গাছগাছালিই আমার বাড়ি। ঐ নীল আকাশ আমার চলার পথ। একটি ছোট্ট সংকীর্ণ খাঁচায় বন্দী হতে চাই না আমি।”
সামা বিস্মিত হলো। তুতা পাখি আর ময়না কথা বলে এটা সে আগে শুনেছে; তাদের যা শেখানো হয় তার চেয়ে বেশি কথা বলতে পারে না। কিন্তু এই ময়নাটি আসলেই অসাধারণ।
“শোন, আমার নাম আজাদ। তুমি বোধহয় জানো এটার কী অর্থ?” ময়নাটি তার ঠোটের চিকন ছোট ডালটি মোচড়াচ্ছে, “এটা অর্থ হল মুক্ত।” কথার প্রসঙ্গে বলি, “আমি তোমাকে সাহায্য করতে পারি এই শর্তে যদি তুমি আমাকে
সাহায্য করো।”
সামা এ ব্যাপারে একটু চিন্তা করলো। কী ভাবে ময়না আজাদ তাকে সাহায্য করতে পারে, আর সেই বা কী ভাবে ময়নাকে সাহায্য করবে।
“হ্যা, হ্যা। আমি জানি তুমি কি চিন্তা করছো। “কী ভাবে এই দুষ্ট ছোট পাখি আমাকে সাহায্য করতে পারে?’ আমি তোমাকে বলবো কী ভাবে সাহায্য করব, আমার বন্ধু। তুমি হলে লাজুক, ঠিক?” ঈষৎ মাথা নাড়ালো সামা, এমন কী এই মূহুর্তে বিস্মিত! “ঠিক আছে, সুতরাং এখানে যা কিছু আমরা একে অন্যের জন্য করতে পারি। তুমি যদি আমার সাথে কথা বলতে থাকো তবে তুমি লজ্জাভাব কাটিয়ে উঠে প্রাণবন্ত হবে। এটাই হচ্ছে আমি কী ভাবে তোমাকে সাহায্য করতে পারি। বিনিময়ে তুমি তোমার বাবা ও অন্যান্য প্রতিবেশীদের বুঝাবে তারা যেনো বনের গাছ আর না কাটেন। যদি তারা এসব গাছগাছালি কেটে ফেলেন, তবে আমরা
আমাদের বাড়ি হারাবো এবং তারপর আমরা আর মুক্ত থাকতে পারবো না।”
এটার কথা সামার কাছে চমৎকার পরিকল্পনা মনে হোল। পরবর্তি সপ্তাহে সামা পরিকল্পনা করলো প্রতিদিন আজাদের সাথে এখানে এসে দেখা
করবে। ঠিক সেই সময় সামা আজাদের সাথে কথা বলে বলে নিজের লজ্জাভাব
থেকে কাটিয়ে উঠে প্রাণবন্ত হতে পারবে।
তারা একে অপরের সঙ্গ ত্যাগ করলো, সামা চমৎকার ময়নার অসাধারণ কথার ব্যাপার চিন্তা করতে করতে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলো।
তার মা ছিলো তাদের ঘরের দরজার পাশে দাঁড়িয়ে, হাতে একটি ঝাঁটা নিয়ে অপেক্ষা করছিলো। সামা জানলো যে তাকে ঐ ঝাঁটা দিয়ে আঘাত করা হবে, কিন্তু তার কাছে এটা তেমন ব্যাপার না। সে এতটা উত্তেজিত ছিলো যে ঝাঁটার ব্যাপারে চিন্তাই করতে পারলো না!
তিন.
পরবর্তী দুপুরের পর পরিকল্পনা মতো ইউক্লিপ্টাস ঝাড়ের দিকে যাওয়ার রাস্তা খুঁজে পেতে তার সমস্যা হলো না । এবং সামার যথেষ্ট বিশ্বাস, আজাদ সেখানে থাকবে। সেই সময় সে ছিলো বিশ্রাম রত, তার মাথা ছিলো তার পাখার উপর এবং সে গুনগুনিয়ে একটি গান গাচ্ছিলো! সে আসলে প্রকৃতপক্ষে মজার একটি ছোট পাখি ছিলো, এবং সামা সাহায্য করতে পারলো না কিন্তু হাসলো।
“এটা কি? আগে কখনো পাখি গান গাইতে শুনো নি।”
“না!” সামা হেসে উত্তর দিলো, “আমি শুনি নি।”
“দেখ! এটা চমৎকার না? তুমি শুধু আমার সাথে কথা বলছ!” আজাদ তার পাখাগুলোকে এক সাথে ঝাঁপটা দিলো। এবং তাদের কথাবার্তা ঐ দিন থেকেই শুরু হলো। শীঘ্রই সামা বুঝতে পারলো যে, সামা যা কিছুই বলছে আজাদ শুনে শুনে তাই করে চলছে। সামা শিহরিত হয়ে উঠলো। এটা ছিলো একটা স্বপ্ন, যা বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। হ্যারি এখন তাকে পছন্দ করবে, আরো বন্ধুরাও। তার এখন বন্ধুর অভাব হবে না। শেষ পর্যন্ত তাকে “লজ্জাশীল বালক” এ কথাটি আর শুনতে হবে না।
এ ভাবে তার সপ্তাহ শেষ হোল। বাসায়, সামার মা-বাবা তার মাঝে বিশেষ পরিবর্তন লক্ষ্য করলো, সে আর আগের জরাগ্রস্ত, লজ্জাশীল কথা বলায় অপারগ বালক নয়। সে এখন বাসায় আগন্তুক মেহমানদের সাথে , প্রতিবেশী বাচ্চাদের সাথে কথা বলে। সবাই সামার এই পরিবর্তন দেখে বিস্মিত হোল যদিও তারা তাকে কিছু জিজ্ঞেস করে নি।
শেষ দিন, আজাদ সামাকে জিজ্ঞেস করলো সে তার বাবা ও প্রতিবেশীদের গাছ না কাটার জন্য অনুরোধ করেছে কী না। সামা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হোল যে, সে তাদের অবশ্যই অনুরোধ করবে তারা যেন গাছ না কাটে। তারপর সে আজাদকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানালো। মানুষ যে ভাবে হেন্ড শেইক করে সে ভাবে আজাদ তার পাখা ঝাপ্টালো। সামা যখন যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হলো আজাদ তাকে বললো, “স্মরণ রাখিও বন্ধু, যদি তুমি তোমার প্রতিজ্ঞা রক্ষা না করো, তুমি আবার আগের সেই লজ্জাশীল বালকে পরিনত হয়ে যাবে।”
সামা বাড়ি ফিরে চিন্তায় পড়ে গেলো কীভাবে সে তার বাবা ও অন্যান্য মানুষদের গাছ কাটা থেকে বিরত রাখতে পারে! যদি সে তাদেকে তা থেকে বিরত থাকতে বলে তবে, তারা তার কথা শুনবে না। যদি সে ময়না গাছ না কাটার জন্য অনুরোধ করেছে এ কথা বলে, তবে তারা তাকে পাগল বলেবে। গভীর রাতে সে বিছানা থেকে উঠে তাদের ঘরের চালায়
de231d876d18d4ae0a7013cc3ec08216
রাখা কুঠারটি হাতে নিলো, এবং এভাবেই প্রতিবেশী ও গ্রামের সবার বাড়ি
বাড়ি গিয়ে সবার কুঠার সংগ্রহ করলো; এগুলো নিয়ে গিয়ে সে দূরে এক মাঠে
মাটির নীচে পুঁতে রাখলো।
পরবর্তি সকালে, গ্রামে হৈ চৈ পড়ে গেলো, এক জন বলে, আমার কুঠার নিয়ে গেছে, আর এক জন বলে আমারটাও, এভাবে তারা পারস্পরিক জিজ্ঞেস করতে লাগলো, কেউ কী কোন চোর দেখেছে কী না। কারও বাড়ির কুঠার আর অবশিষ্ট নেই। সবার বাড়ির কুঠার কে যেন নিয়ে গেছে। কেউ এই রহস্য ভেদ করতে পারলো না। গ্রামের এক বয়স্ক ব্যক্তি বললো, “এটা জঙ্গলের কাজ,
সে চায় না,তুমি আর জঙ্গলের গাছ নিধন করো। গাছ কাটলে জঙ্গলে বসবাস রত পশুপাখিরা তাদের ঘর হারায়। এতে তাদের অনেক কষ্ট হয়। আর গাছে নিধন করিও না, তা না হলে তুমি জঙ্গলের রোষানলে পড়বে।” গ্রামবাসী সবাই একমত হলো, তারা আর জঙ্গলের বৃক্ষ নিধন করবে না। বৃদ্ধ মানুষটি বললো ঠিক আছে।
এতে সামা খুব খুশি হোল। সে তার প্রতিজ্ঞা রক্ষা করতে পেরেছে। ময়না পাখি-’আজাদ’ মুক্তই থাকবে এবং সামা আর পূণরায় লজ্জাশীল বালক হবে না।
রাতে খাবারের পর, দরজার বাহিরে সামা কক্কক শব্দ শুনতে পেলো। সে বাহিরে পা বাড়ালো, এম্নিই আজাদকে দেখতে পেলো, “সুতরাং সামা! আমরা
চিরদিনের জন্য বন্ধু হতে চলেছি, তুমি তোমার প্রতিজ্ঞা রক্ষা করেছো এবং আমি আমারটা রক্ষা করেছি। যদি আমাকে কোন দিন তোমার প্রয়োজন হয়, তুমি জানো আমার সাক্ষাৎ কোথায় পাবে।”
“হ্যা, আজাদ। আবারও তোমাকে ধন্যবাদ। তুমি চিরদিনের জন্যই আমার বন্ধু হয়ে থাকবে।”
ঘরের ভেতর থেকে তার মা তাকে ডেকে বলছে,”সামা! তুমি কার সাথে কথা বলছ?”
“কেউ না মা!” সে উত্তর দিলো।
“এটা ব্যাপার না। তুমি পাখির সাথে যতক্ষণ ইচ্ছে কথা বলতে পারো সামা!”
“হ্যা, মা! আমি পাখিদের সাথে কথা বলবো!” সামা উত্তর দিলো এবং আজাদ সামার দিকে চোখ মাড়লো।
——
অনূদিত গল্প
রেটিং করুন:
Rating: 0.0/5 (0 votes cast)
Rating: 0 (from 0 votes)
এই পোস্টের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য একান্তই পোস্ট লেখকের নিজের, লেখার যে কোন নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব লেখকের। অনুরূপভাবে যে কোন মন্তব্যের নৈতিক ও আইনগত দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্তব্যকারীর। শব্দনীড় ব্লগ কোন লেখা ও মন্তব্যের অনুমোদন বা অননুমোদন করে না।
▽ এই পোস্টের ব্যাপারে আপনার কোন আপত্তি আছে?

১৪ টি মন্তব্য (লেখকের ৭টি) | ৬ জন মন্তব্যকারী

  1. নাজমুল হুদা : ১১-০৬-২০১২ | ১২:১৪ |
    Delete
    বিদেশী গল্পের সাথে সেতুবন্ধনের এই প্রয়াস প্রশংসণীয়! গল্পটাও শিক্ষামূলক আর পরিবেশ সচেতন করে তুলবার জন্য কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। ভাষায় কোথাও কোথাও কিছু মিশ্রণ ঘটেছে, আছে কিছু টাইপো। এগুলো দূর করলে এটাকে অনবদ্য অনুবাদ বলতে যা বুঝায় তা হয়ে উঠবে।
    আপনার এ উদ্যোগের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ভাই।

About Me

যেমন ইচ্ছে-১২

Latest Widgets

New Blogger Templates

dashboard

Pages

Powered by Blogger.

Popular Posts